কয়েকটি ক্ষেত্রে শাস্তির পরিমাণ বাড়িয়ে মেরিন ফিশারিজ অর্ডিন্যান্সকে বাংলায় করে নতুন আইন পাস হয়েছে। সোমবার মৎস্য ও প্রাণী সম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এ সংক্রান্ত ‘সামুদ্রিক মৎস্য বিল-২০২০’ সংসদে পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিরোধী দলের সদস্যদের উত্থাপিত সংশোধনী ও জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
বিলে কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বাধা দিলে দুই বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ইচ্ছাকৃতভাবে মৎস্য আহরণের নৌযানের ক্ষতি করলে ২ বছরের জেল এবং ২৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে, যা বিদ্যমান আইনে তিন বছরের জেল এবং ১ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। বিস্ফোরক ব্যবহার করে, হতচেতন বা অক্ষম করে মাছ ধরলে তিন বছরের জেল বা ১ কোটি টাকা দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আগের আইনে ১ লাখ টাকা জরিমানার বিধান ছিল। বেআইনি ধরা মাছ সংরক্ষণ, মজুদ বা বিক্রি করলে ২ বছরের জেল এবং ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
নৌযান চিহ্নিতকরণে ব্যর্থতা, অর্থাৎ কেউ যদি বাংলাদেশের মৎস্য জলসীমায় মাছ ধরার নৌযান পরিচালনা করে এবং তা নির্ধারিত নিয়মে মার্কিং না করে, তার শাস্তি দুই বছরের জেল এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। আগের আইনে এ অপরাধে ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান ছিল। এ ছাড়া নৌযানে থাকা ব্যক্তিদের অপরাধের জন্য ওই নৌযানের স্কিপার দায়ী হবে। এ অপরাধে জরিমানার পরিমাণ ৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা এবং ২ বছরের জেলের বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ জাল, সরঞ্জাম বা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে ২ বছরের জেল এবং ২৫ লাখ টাকারজরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো বিদেশি জাহাজ এ আইনের অধীনে অপরাধ করলে তার মালিক, স্কিপার এবং নৌযানে অবস্থানরত ব্যক্তিরা দায়ী হবে। এর জন্য ৩ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫ কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে এ অপরাধের জন্য তিন বছরের জেল এবং ১ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে মন্ত্রী শ ম রোজাউল করিম বলেন, আন্তর্জাতিক আইনি লড়াইয়ের ফলে অর্জিত বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের ১ লাখ ১৮ হাজার ১১৩ কিলোমিটার একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চলে মৎস্য সম্পদ নিরূপণ, পরিকল্পনা গ্রহণ, দেশি-বিদেশি মৎস্য নৌযান অবৈধভাবে ও অতিরিক্ত মৎস্য সম্পদ আহরণ, নিয়ন্ত্রণ, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনে বিদ্যমান অধ্যাদেশ হালনাগাদ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় বিলটি প্রস্তুত করা হয়েছে।